ডোমেন কিনে ব্লগারে ওয়েবসাইট সাজানোর পদ্ধতি

ডিজিটাল মার্কেটিং এর মাধ্যমে মার্কেটপ্লেস এর টিকে থাকতে হলে আমাদের সকলের একটি ওয়েবসাইটের প্রয়োজন। সেক্ষেত্রে আমাদের নিজস্ব ওয়েবসাইট তৈরি করতে একটি নিজস্ব ওয়েবসাইট নেম অর্থাৎ ডোমেনের প্রয়োজন। 


বর্তমান বিশ্বে এমন অনেক ডিজিটাল মার্কেট রয়েছে যাদের নিজস্ব ওয়েবসাইট রয়েছে। এবং সেই ওয়েবসাইটগুলো তাদের নিজস্ব কোন সিলেক্টেড নাম দিয়ে খোলা। সে ক্ষেত্রে আমাদের সকলকে একটি ইউনিক এবং নিজস্ব নাম সার্টিফাইড করে নিতে হবে।

পেজ সূচিপত্রঃ ডোমেন কিনে ব্লগারে ওয়েবসাইট সাজানোর পদ্ধতি

একটি সার্টিফাইড ডোমেন কোথা থেকে কিনবেন

আমাদের সকলের নিজস্ব ওয়েবসাইট চালানোর জন্য একটি ওয়েবসাইট ইউআরএল বা একটি নিজস্ব ওয়েবসাইট প্রয়োজন সেই ওয়েবসাইট খুলতে আমাদের সকলকে হোস্টিং ও ডোমেন কিনতে হয়। কিন্তু ব্লগার ওয়েবসাইটে কোন হোস্টিং এর প্রয়োজন হয় না, এই ওয়েবসাইটের ডোমেন কেনার মাধ্যমে আমরা একটি নিজস্ব ওয়েবসাইট তৈরি করতে পারি।

এক্ষেত্রে গুগল থেকে আমাদের হোস্টিং প্রোভাইড করা হয়। এবং ব্লগার এ কাজ করার জন্য কোন ব্রডব্যান্ড বা ইত্যাদি আনুষাঙ্গিক যে সকল জিনিসের দরকার। তার কোনটি প্রয়োজন হয় না শুধুমাত্র একটি পেইড ডোমেনই যথেষ্ট।

এক্ষেত্রে দেশের অভ্যন্তরীণ কিংবা আন্তর্জাতিক কিছু ডোমেন প্রোভাইডার ওয়েবসাইট যেমন নেমচিপ, হোস্টিংগার ইত্যাদি ওয়েবসাইট থেকে আমরা নিজেদের ওয়েবসাইটের জন্য একটি ইউনিক নাম বাছাই করতে পারি। কিন্তু সে ক্ষেত্রে আমাদের খেয়াল রাখতে হবে ডোমেনটি যেন (. com) এডেড ডোমেন হয়।


নিজস্ব (.com) ডোমেন থাকার ফলে তা গুগলে SEO রাঙ্ক করতে খুব একটা সময় লাগে না। সে ক্ষেত্রে আমরা নেমচিপ বা হোস্টিংগার বা দেশীয় কোন ওয়েবসাইট থেকে থেকে পেইড ডোমেন কিনে আমাদের ওয়েবসাইট বড় করার মাধ্যমে ডিজিটাল মার্কেটিং করতে পারি। 

সে ক্ষেত্রে আমরা যদি দেশীয় কোন ওয়েবসাইট থেকে হোস্টিং বা ডোমেন কিনি তাহলে দেশের সরকার তার নিজস্ব প্রয়োজনে যখন তখন আমাদের ডোমেনটি ব্লক করে দিতে পারে সে ক্ষেত্রে আমাদের ওয়েবসাইট যখন তখন বন্ধ হয়ে যেতে পারে। কিন্তু বিদেশী কোন ডোমেন প্রোভাইডার ওয়েবসাইট থেকে ডোমেইন কিনলে তা বন্ধ করার জন্য কাউকে যথাযথ কারণ উপস্থাপন করতে হবে।


তারপর সেই ডোমেন প্রোভাইডার ওয়েবসাইটের অথরিটি তার সত্যতা যাচাই করবে। এবং যদি তার সত্যতা সঠিকভাবে যাচাই না হয় সে ক্ষেত্রে তারা আমাদের ওয়েবসাইট যখন তখন যেকোনো কারণবশত বন্ধ করতে পারবে না। সে ক্ষেত্রে বেশিও ডোমেন প্রোভাইডার ওয়েবসাইট থেকে ডোমেন না কিনে বিদেশি ওয়েবসাইট থেকে ডোমেন কেন অধিক উত্তম।

আরো পড়ুন: মানব জীবনে আধুনিকত্বের ছোঁয়া

ডোমেইন কেনার পর তা ব্লগারের সাথে লিংক করব কিভাবে

নেম চিপ বা যেকোনো ডোমেন প্রোভাইডার ওয়েবসাইট থেকে ডোমেন কেনার পর তারা একটি ডোমেন লিঙ্ক আমাদের প্রোভাইড করবে যা আমাদের ইমেইল এ সরাসরি পাঠানো হবে। সেই ইমেইলের ওপর চাপ দিয়ে আমাদের সেখানে কিছু DNS ও A address যুক্ত করতে হবে। যখন আমরা ব্লগার এ ঢুকবো তখন আমাদের সামনে একটি এমন ইন্টারফেস আসবে ।

সেখানে আমরা যে ডোমেনটি কিনেছি সেই ডোমেনের নামটি এই টাইটেল সেকশনে লিখতে হবে। তারপরে আমাদের সামনে আসবে একটি ফ্রি ডোমেন সেকশন যেখান থেকে আমরা পেড ডোমেন না কিনলেও ব্লগার থেকে আমাদের প্রোভাইড করা হবে। সেক্ষেত্রে এই সেকশনটি যদি আমরা পেইড ডোমেন কিনে থাকি তাহলে ততটি গুরুত্বপূর্ণ নয়।
এখানে আমাদের পেইড ডোমেনের নামের সাথে কিছু সংখ্যা যুক্ত করে নেক্সট বাটনে চাপ দিয়ে এগিয়ে যেতে হবে। তারপরে আমাদের সামনে আসবে একটি এডমিন নেম সেকশন। যেখানে আপনি আপনার নাম বা আপনার ওয়েবসাইটের নাম দিয়ে ফিনিশ বাটনের চাপ দিতে পারেন এক্ষেত্রে আপনি যখন ব্লগার এ ঢুকবেন তখন ডিসপ্লেতে আপনি নিজের নাম কিংবা ওয়েবসাইটের নাম দেখতে পাবেন।

তারপর আমাদের সকলের সামনে একটি এমন ইন্টারফেস আসবে।

এই ইন্টারফেস থেকে আমাদের সামনে অনেক কয়টি অপশন আসবে যেমন পোস্ট, স্ট্যাটাস, কমেন্ট, পেজ ইত্যাদি এই সবগুলোর মধ্যে আমাদের প্রথমে সেটিংস এ চাপ দিতে হবে। এবং সেটিংস এর চাপ দেওয়ার পর আরও বিভিন্ন ধরনের অপশন আমাদের সামনে আসবে। সেখান থেকে আমাদের নিচে নেমে পাবলিশিং অপশনে আসতে হবে। এবং সেখান থেকে কাস্টম ডোমেনের উপর চাপ দিতে হবে।
কাস্টম ডোমেনের উপর চাপ দেওয়ার পর সেখানে আমাদের পেইড ডোমেনটির নাম লিখতে হবে। কিন্তু এটি মাথায় রাখতে হবে যেন ডোমেন্টের সামনে (www.) এবং শেষে (.com) যুক্ত থাকে। এরপরে সেভ বাটনে চাপ দিলে কাস্টম ডোমেইনের নিচের সেকশনে কিছু লেখা আমাদের সামনে আসবে।

এরপর আমাদের যেই ওয়েবসাইট থেকে ডোমেন কেনা হয়েছে সেই ওয়েবসাইটের ড্যাশবোর্ডে যেতে হবে এবং ড্যাশবোর্ডে গিয়ে ডোমেন লিস্ট অপশনে যেতে হবে। এবং তারপর ডোমেন লিস্ট অপশনে গিয়ে আমাদের এডভান্স ডিএনএস অপশনটি খুঁজে বের করে তার ভেতরে প্রবেশ করতে হবে।


এই অ্যাডভান্স ডিএমএস অপশনে প্রবেশ করার পর সেখানে কিছু এড্রেস যুক্ত থাকবে সেই এড্রেসগুলো ডিলিট করে দিয়ে আমাদের কিছু 2 টি CNAMEs address এবং 4 টি A address যুক্ত করতে হবে। এবং তারপরে ব্লগার এ এসে পুনরায় সেভ বাটনে চাপ দিতে হবে এবং তারপর আপনার পেইড ডোমেনটি অ্যাকটিভ হয়ে যাবে।

                                       

ডোমেনটি একটিভ হওয়ার পর গুগল SEO র‍্যাঙ্কিংয়ের জন্য কিছু এক্সট্রা ফিচার অন করতে হবে। যা আমাদের ওয়েবসাইটকে গুগল এর জন্য rank করাবে।


এই তিনটি অপশন অন করার ফলে কেউ যদি আমাদের ওয়েবসাইটের নাম দিয়ে সার্চ দেয় তো সার্চ ইঞ্জিন সেক্ষেত্রে অটোমেটিকলি www. কথাটি একটিভ করে দেবে এবং ডিরেক্ট আমাদের ওয়েবসাইটে প্রবেশ করাবে। এবং HTTPS availability ও HTTPS redirect এই অপশন দুটি আমাদের ওয়েবসাইটে এডভান্স সিকিউরিটি অপশনটি অন করে দেবে এতে আমাদের ওয়েবসাইট থাকবে সুরক্ষিত।

আরো পড়ুন: স্ক্যামের মাধ্যমে টাকা ও ব্যক্তিগত তথ্য আত্মসাৎ

অরডিনারি আইটি প্রদত্ত Theme ইউজ

মূলত অর্ডিনারি আইটি যা বাংলাদেশের সবচেয়ে বৃহত্তম ডিজিটাল মার্কেটিং প্রশিক্ষণ কেন্দ্র। যেখানে রয়েছে গুগল সার্টিফাইড উচ্চ শিক্ষিত মেন্টর যারা আমাদের ডিজিটাল মার্কেটিংয়ের কোর্স করিয়ে থাকে। তারা নিজের ওয়েবসাইটে জেট থিমের আপডেট ভার্সন ব্যবহার করে থাকে। যা আমাদের সম্পূর্ণ বিনামূল্যে প্রোভাইড করে থাকে।

আমরা যদি অর্ডিনারি আইটি প্রদত্ত থিমটি ব্যবহার করতে চাই সেক্ষেত্রে আমাদের অর্ডিনারি আইটি থেকে থিমের অ্যাক্টিভেশন নিতে হবে। তারপর থিমটি আমাদের কম্পিউটারে বা ল্যাপটপে ডাউনলোড করতে হবে। এবং থিমটিকে ডিকোড করতে আমাদের একটি নোটপ্যাডের প্রয়োজন হবে । সে ক্ষেত্রে আমরা উইন্ডোজ ইনবিল্ড নোটপ্যাড বা suppline text নামক একটি থার্ড পার্টি অ্যাপস ব্যবহার করতে পারি।

সে ক্ষেত্রে প্রথমে আমাদের থিমটি ডাউনলোড করে সাবলাইন টেক্সটে ওপেন করতে হবে এবং সেখান থেকে সম্পূর্ণ কোড গুলো Ctrl + A দ্বারা সিলেক্ট করে Ctrl + C দ্বারা কপি করতে হবে। এবং তারপর ব্লগারে এসে থিম অংশে গিয়ে সেখান থেকে Edit HTML সেকশনে প্রবেশ করতে হবে এবং ডিফল্ট যে থিমটি অন রয়েছে তা Crtl + A দ্বারা সিলেক্ট করে Backspace চাপ দেওয়ার মাধ্যমে সম্পূর্ণ কোড মুছে ফেলতে হবে এবংCtrl + V চাপ দিয়ে সাবলাইন টেক্সট থেকে কপি করা সব কোড পেস্ট করতে হবে।

এতে বর্তমানে অর্ডিনারি আইটিতে যেই থিমটি ব্যবহার করা হচ্ছে সেই থিমটি আমাদের ওয়েবসাইটে অটো একটিভ হয়ে যাবে। তারপর আমাদের কিছু এডভান্স কোডিং করে এবং লেআউট সেকশন থেকে কিছু অংশ কাস্টমাইজ করে আমাদের নিজস্ব ওয়েব সাইটটি নিজেদের মতো করে সাজাতে হবে। এবং ফটোশপের বিভিন্ন কাজ করে আমাদের ওয়েবসাইটের হেডিং সেকশন এবং বিভিন্ন কালার কম্বিনেশন চেঞ্জ করতে হবে।

ওয়েবসাইটে পোস্ট রাইটিং এবং এডভান্স কোডিং

ওয়েবসাইটে যদি আর্টিকেল পোস্ট করতে চাই। সেক্ষেত্রে টাইপিং এর মাধ্যমে আর্টিকেল লিখতে আমাদের অনেক সময়ের প্রয়োজন হয়। সে ক্ষেত্রে স্মার্ট ওয়ার্ক করার মাধ্যমে আমরা দ্রুত একটি কাজকে সম্পন্ন করতে পারি। সে ক্ষেত্রে Chrome থেকে বিভিন্ন এক্সটেনশন ব্যবহার করে ভয়েস টাইপিং এর মাধ্যমে আমরা সহজেই কথা বলে টাইপ করতে পারি।

আরো পড়ুন: বাংলা আর্টিকেল লিখার নিয়ম


বর্তমানে নিজের ওয়েবসাইট যদি নিজের মত না সাজিয়ে কাজ না করা হয় তাহলে গুগলে ‍SEO র‍্যাঙ্ক করানো সম্ভব নয়। এছাড়াও আমরা যদি অন্য কারো ওয়েবসাইটের কোন কথা বা কিছু আমাদের ওয়েবসাইটের সাথে লিংক অবস্থায় রাখি। তাহলে google আমাদের ওয়েবসাইটটি অটোমেটিক লক করে দেবে। সে ক্ষেত্রে আমরা আমাদের ওয়েবসাইটে আর কাজ করতে পারবো না।

আমাদের সকলের নিজেদের ওয়েবসাইট নিজেদের মতো সাজাতে হবে। সেক্ষেত্রে আমাদের প্রয়োজন advance কোডিং জানা এবং প্রয়োজন লেআউট থেকে কোডিং ছাড়া কিভাবে ওয়েবসাইটের ইন্টারফেস চেঞ্জ করা যায় তা শেখা। কারণ লে আউট হলো কোডিং ছাড়া সহজে ওয়েবসাইট সাজানোর একটি সেকশন।

সর্বশেষ মন্তব্য: ডোমেইন কিনে ব্লগারে ওয়েবসাইট সাজানোর পদ্ধতি

নিজের ওয়েবসাইট নিজে তৈরি করার মাধ্যমে আমরা বিভিন্ন ধরনের কাজ শিখতে পারবো এবং কাজের প্রতি দক্ষ হতে পারব। সেক্ষেত্রে আমাদের নিজের ওয়েবসাইট নিজেই তৈরি করা উচিত। এবং সকল কাজ সঠিকভাবে সম্পন্ন করে গুগলের SEO র‍্যাংকিং এ নিয়ে আসার জন্য আমাদের ওয়েবসাইটের পিছনে যথাযথ শ্রম দেওয়া উচিত। সে ক্ষেত্রে আমরা ওয়েবসাইটটি গুগলের রেংক করাতে পারবো।

সকল নির্দেশনা মেনে কাজ করলে আমরা পেইড ডোমেন ব্যবহার করে ব্লগার এ ওয়েবসাইট খুলে তা সঠিকভাবে সাজিয়ে মাসে দেড় থেকে দুই লাখ টাকা ইনকাম করতে পারবে। সেক্ষেত্রে আমাদের প্রতিদিন এক থেকে দুইটি আর্টিকেল রাইট করতে হবে এবং অন্যকে আমাদের ওয়েবসাইটে কাজ করার মত সুযোগ করে দিতে হবে। সেক্ষেত্রে বিভিন্ন অথর পারমিশন দিয়ে আমরা মানুষকে আমাদের ওয়েবসাইটে কাজ করার এক্সেস দিতে পারব। এবং ওয়েবসাইট থেকে একটি সফল ওয়েবসাইট বানাতে পারবো।


এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

উদ্যোক্তা ওয়ার্ল্ডের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url