স্ক্যামের মাধ্যমে টাকা বা ব্যক্তিগত তথ্য আত্মসাৎ

পোষ্টের সূচিপত্র:

ভূমিকা:

প্রতারণা বা  স্ক্যাম বর্তমান বিশ্বে এমন একটি সমস্যা যা মানুষের অর্থ সম্পদ এবং গোপনীয় তথ্য হাতিয়ে নিয়ে মানুষকে ফেলছে এক বিভ্রান্তকর পরিস্থিতিতে। সাধারণত এই প্রতারণা বা স্ক্যাম করা হয় শিক্ষিত বা অশিক্ষিত উভয় মানুষের সাথে। সাধারণত প্রতারণার এই ফাঁদে পা মানুষ প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ উভয় ভাবে দিয়ে থাকে।  সাধারণত প্রতারণার জন্য প্রতারকরা নানামুখী পন্থা ব্যবহার করে থাকে। সাধারণত গ্রামের প্রযুক্তি না জানা কিছু সংখ্যক স্বল্পশিক্ষিত মানুষ এই প্রতারণার শিকার বেশি হয়ে থাকে ।

                                    

বিভিন্ন ধরনের ওয়েবসাইট ব্যবহার করে প্রতারণা:

প্রতারকরা প্রতারণার জন্য একটি অভিনব পদ্ধতি ব্যবহার করে যা হল ওয়েবসাইট তৈরির মাধ্যমে প্রতারণা। এই প্রতারণা পদ্ধতিতে তারা মানুষকে বিশ্বাস করতে বাধ্য করে কিভাবে অ্যাড দেখে বিনা পরিশ্রমে এবং বিনা সময় ব্যয় করে টাকা উপার্জন করতে হয়। এতে করে শিক্ষিত এবং অশিক্ষিত কিছু সংখ্যক মানুষ যারা বিনা পরিশ্রমে অর্থ উপার্জন করতে চায় তারা এই প্রতারণার প্রত্যক্ষ শিকারি হিসেবে গণ্য হয়। তারা নিজেরাই নিজেদের প্রতারণার শিকার হিসেবে তুলে ধরে। এই প্রতারণা পদ্ধতিটিতে মানুষকে প্রথমে বিভিন্ন ধরনের সাবসক্রিপশন কিনতে বাধ্য করা হয়। যাতে করে তারা ঘরে বসেই টাকা ইনকামে আগ্রহী হয়ে ওঠে এবং একটি নির্দিষ্ট সময় পর এই প্রতারণা গোষ্ঠী সকল টাকা হাতিয়ে নিয়ে ওয়েবসাইটটি বন্ধ করে দেয় এর ফলে সাধারণ মানুষের কিছু করার থাকে না এবং এই ওয়েবসাইটে প্রতারকদের সাথে যোগাযোগের কোন মাধ্যম তারা রাখেনা। যাতে করে তাদের প্রতি কোন আইনি ব্যবস্থা নাও সক্ষম হয় না।

হোয়াটসঅ্যাপের মাধ্যমে প্রতারণা:

বর্তমানে বাংলাদেশে একটি অন্যতম প্রতারণা মাধ্যম হলো  হোয়াটসঅ্যাপ। সাধারণত এই মাধ্যমে প্রতারণা করা হয় কোন উচ্চপদস্থ কর্মকর্তার ছবি এবং নাম ও পরিচয় ব্যবহার করে সাধারণ জনগণ এবং স্বল্প জ্ঞানী অল্পসংখ্যক কিছু মানুষকে এই প্রতারণার মূল শিকার হিসেবে গণ্য করা হয়। এক্ষেত্রে তারা সেই সাধারণ মানুষকে বিভিন্ন ধরনের ভুল তথ্য দেওয়ার মাধ্যমে এবং তার বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার মাধ্যমে তাকে প্রথমে ভয় দেখানো হয়। এবং তারপরে তার কাছ থেকে ওটিপি বা কিউআর কোড নেওয়ার মাধ্যমে তার ডিভাইসটি প্রতারকদের ডিভাইসের সাথে লিংক করে নেওয়া হয়। এবং তারপরে তার যাবতীয় গোপন তথ্য হাতিয়ে নেওয়ার মাধ্যমে এবং ব্ল্যাকমেইল করে একটি মোটা অংকের টাকা তাদের কাছে দাবি করা হয়। এবং তাদেরকে এমনভাবে ভয় দেখানো হয় যেন তারা প্রতারকদের বিরুদ্ধে আইনি কোন ব্যবস্থা নিতে ভয় পায় । এতে করে প্রতারক গোষ্ঠী হয়ে ওঠে আরও সাহসী ও শক্তিশালী। 

ডেলিভারি ম্যান এর মাধ্যমে প্রতারণা:

সাধারণত বাংলাদেশের একটি অন্যতম প্রতারণা মাধ্যম হলো ডেলিভারি ম্যান এর প্রতারণা। সাধারণত এই প্রতারণার মাধ্যমে আমরা নিজেরাই নিজেদেরকে প্রতারণার জন্য প্রতারক গোষ্ঠীর কাছে নিজেকে শোপে দেই। এই প্রতারণার মাধ্যমটি সাধারণত কোন অনলাইনে পণ্য কেনার মাধ্যমে হয়ে থাকে। আমরা যখন কোন পণ্য কেনার জন্য অনলাইনে বিভিন্ন ওয়েবসাইটে  পণ্যটি কেনার জন্য তাদের সাথে যোগাযোগ করি তখন তারা আমাদের কাছে স্বল্প সংখ্যক কিছু অর্থ দাবি করে ডেলিভারি চার্জ হিসেবে এবং আমাদের কে বিশ্বাস করানো হয় যে ওয়েবসাইটটি তে আমরা ক্রয় করতে গিয়েছি সেই ওয়েবসাইটটি বিশ্বস্ত। এবং তারপরে ১ থেকে ২ দিনের মাথায় সেই প্রতারক গোষ্ঠী আবার আপনাকে মেসেজ করে জানিয়ে দেয় যে আপনার পণ্যটি আমাদের ডেলিভারি ম্যান এর কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে এবং সম্পূর্ণ পেমেন্ট কমপ্লিট করে একটি ওটিপি কোডের মাধ্যমে ডেলিভারি ম্যান এর কাছ থেকে সেই পণ্যটি বুঝে নিতে হবে। এক্ষেত্রে সাধারণ জনগণ যখন সম্পূর্ণ টাকাটি পরিশোধ করে দেয় তখন প্রতারক গোষ্ঠী সব জায়গা থেকে তাকে ব্লক করে দেয়। এবং এটি একটি ভয়াবহ প্রতারণা মাধ্যম এই বাংলাদেশের বুকে। এছাড়াও বর্তমানে ডেলিভারি ম্যানরা ফাঁকা বক্স নিয়ে আসার মাধ্যমেও বা কাঙ্খিত পণ্যের বিনিময়ে অন্য কোন পণ্যে বাক্সটি ভারী করে গ্রাহকের কাছে ডেলিভারি করে থাকে যা একটি অন্যতম প্রতারণার মাধ্যম

ফেসবুকে অ্যাড এর মাধ্যমে প্রতারণা:

বর্তমানে প্রতারকরা ফেসবুক সহ বিভিন্ন অনলাইন প্লাটফর্ম বেছে নিয়েছে প্রতারণার জন্য। সাধারণত ফেসবুকে এড দেওয়ার মাধ্যমে কিংবা রেকর্ডেড ভিডিওর মাধ্যমে প্রতারণা করে থাকে। এই প্রতারণাটিতে সাধারণত সাধারণ জনতা এবং কিছু সংখ্যক শিক্ষিত জনতা ও প্রতারণার শিকার হয়। এক্ষেত্রে প্রতারক প্রথমে আপনাকে বিশ্বাস করাবে তাদের একটি 🚫 পণ্যের এড ক্যাম্পেইনে 🚫 স্বল্প মূল্যে অতি মূল্যবান একটি পণ্য দেওয়া হচ্ছে এবং তারা তাদের ওয়েবসাইটে প্রথমে পেমেন্ট কমপ্লিট করতে বলবে এবং ডেলিভারি চার্জ ফ্রি দেওয়ার মতো কিছু ধরনের লোভ দেখানো হবে এর ফলে যখন সাধারন মানুষ এই ওয়েবসাইটটিতে সেই পণ্য কেনার জন্য সম্পূর্ণ টাকা পরিশোধ করে তখন তাকে আর কোনো ধরনের রেসপন্স করা হয় না। এতে করে আমাদের জাস্টিফাইড ও বিশ্বস্ত ওয়েবসাইট থেকে কোন পণ্য কেনা উচিত।

উপসংহার:

প্রতারণার হাত থেকে বাঁচতে এবং প্রতারক গোষ্ঠীর শিকার হওয়া থেকে নিজেকে রক্ষা করতে আমাদের সর্বদাই সচেতন থাকতে হবে এবং একজন সচেতন নাগরিক হিসেবে অন্য কেউ সচেতন করতে হবে। এতে করে আমরা প্রতারণার হাত থেকে রক্ষা পেতে পারি।


আরো পরুন ঃ মানব জীবনে আধুনিকত্ত্বের ছোঁয়া




এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

উদ্যোক্তা ওয়ার্ল্ডের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url